বরগুনার পাথরঘাটায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ৫ম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।গত ৩১ মার্চের এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয় হয়েছে।পাথরঘাটার মোট ৫১ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর হোসেন দাদু পেয়েছেন মাত্র ১১৮০২ ভোট।অপরদিকে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধী আনারস প্রতীকের প্রার্থী গোলাম মোস্তফা কবির ৩১২৫৩ ভোট পেয়ে বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।
দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, নির্বাচনের সময় দলের অনেক জ্যৈষ্ঠ নেতা নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন নি। এমন অনেক লোক আছেন যারা আলমগীর দাদুর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েও তাকে ভোট দেন নি এবং গোপনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। আর সে কারণেই এই পরাজয়।
কেচোর গর্ত খুঁড়তে যেয়ে সাপ বেড়িয়ে এসেছে।তার হারের কারণ খুঁজতে যেয়ে পাওয়া গেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মীর দাবি, নৌকার প্রার্থী সৎ লোক নয়।তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।তিনি একজন ভালো সংগঠক হলেও জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি যোগ্য লোক না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতার দাবি, তিনি মাদকে (মদ) আসক্ত।এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে।এছাড়াও তিনি সাংসদ রিমনকে বিভিন্ন ভাবে গালি দেওয়া থেকে শুরু করে দলের নেতা-কর্মীদের সাথে বাজে আচরণ করতেন।
এমন অভিযোগ সাধারণ ভোটারদেরও।তারা মনে করেছেন নৌকার প্রার্থী যোগ্য লোক নয়।স্থানীয় সরকারের দলীয় সাংসদকে অকথ্য ভাষায় নিয়মিত গালিগালাজ করতেন।সাধারন মানুষের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ন আচরন ও বেফাশ মন্তব্য করেন।এছাড়াও কয়েক বছর আগে সার্কাসের নামে জুয়ার বাজার উন্মুক্ত করে চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে।এসব কারণেই নৌকার প্রার্থী তাদের পছন্দ ছিলো না।আবার অনেকে মনে করেন নৌকার বিপক্ষে ভোট দিলেই হাল ছেড়ে বাঁচেন। এগুলোই হতে পারে তার শোচনীয় পরাজয়ের মূল কারণ।
তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে আরও জানা যায়, আগের সাবেক চেয়ারম্যান রিপন মোল্লাকে আ’লীগ নমিনিনেশন দিলে নৌকা ফুটো হত না।বরং তিনি বিপুল ভোটে জিততেন।তাকে না দিয়ে যদি আনারস প্রতীক নিয়ে যে চেয়ারম্যান হয়েছেন তাকে দিলে কোনো সমস্যাই ছিলো না।
তারা আরও জানান, যেখানে দাদুর আ’লীগ থেকেই মনোনয়ন পাওয়ার কোনো কথাই না সেখানে কিভাবে সে মনোনয়ন পেলো সেটা কারো বোধগম্য নয়।সে কিভাবে নৌকার মাঝি হলো সেটা খুঁজে বের করা দরকার।
আরও জানা যায়, গোলাম মোস্তফা কবির একজন সৎ লোক।তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।তিনি অনেক বছর যাবত তৃণমূল কর্মীদের খোঁজ খবর রেখেছেন।সুখে-দুঃখে সকলের পাশে ছিলেন।এসব কারণেই বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া সত্যেও তিনি বিজয় লাভ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জৈষ্ঠ্য নেতা বলেন, আওয়ামীলীগের এমন ভরাডুবিতে দীর্ঘদিনের দলীয় কোন্দলকে দায়ী করেছেন তিনি।।তাই এখন থেকেই দলকে ঢেলে না সাজালে ভবিষ্যতে আরও মাশুল দিতে হবে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply